তাওয়াজ্জুহ্-বিল্-গায়েব এবং মহিলাদের ছবক প্রদান পদ্ধতি। ইসলামি শরিয়তের পর্দার হুকুম মেনে মহিলা ত্বরিকত পন্থীদের আত্মশুদ্ধি
“তাওয়াজ্জুহ্ বিল গায়েব” মানে অদৃশ্যভাবে পীর সাহেব তার খানকা থেকে পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে অবস্থানরত মুরীদদের লতিফাসমুহে তাওয়াজ্জুহ্-বিল্-গায়েবের মাধ্যমে নিজ সিনার বাতেনী-নূর প্রয়োগ করে আত্মশুদ্ধ করা। মাওলানা হাজী এমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী (রঃ) “জিয়াউল কুলুব” কিতাবে তাওয়াজ্জুহ বিল গায়েব সম্পর্কে বলেছেন “মুরীদ যদি পীর সাহেবের সামনে উপস্থিত নাও থাকে, তবে গায়েবানা তাওয়াজ্জুহ্ দিয়ে পীর সাহেব মুরীদের উপকার করতে সচেষ্ট থাকবেন”। কাগতিয়া-আলিয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের সিলসিলায়(ত্বরিকতে) মহিলারা ঘরে বসে তাদের নির্দিষ্ট ছবক গ্রহন এবং পরিবর্তন করতে পারে। ছবকের জন্য পীরের খানকায় যেতে হয়না। পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে, ছবক গ্রহণ এবং পরিবর্তন করতে পারে। মহিলা মুরীদ মাগরিবের নামাজের পর, সিলসিলায় নির্দিষ্ট অজিফা আদায় করে, আকাঙ্খিত ছবকের নিয়তে জায়নামাজে বসে থাকবে। ইতিপূর্বে পীর সাহেবকে, ঐ মহিলার কোন প্রতিনিধি মহিলার অজিফার মেয়াদ এবং নাম অবহিত করাবেন।
তখন পীর সাহেব নামাজান্তে বসে, ঐ মহিলাকে খেয়াল করে তাঁর খানকা থেকে তাওয়াজ্জুহ্ প্রদান করবেন। এবং ঐ তাওয়াজ্জুহ্ মহিলাকে মুরীদান পৃথিবীর যে প্রান্তে থাকুক না কেন, ইন্শাআল্লাহ্তাঁর নির্দিষ্ট ছবকের জায়গায় সে ঐ তাওয়াজ্জুর তাছির বা প্রভাব অনুভব করতে পারবে। বিশেষ ক্ষেত্রে প্রবাসী পুরুষ মুরীদদের ও “তাওয়াজ্জুহ্ বিল্ গায়েব” প্রদান করা হয়। সম্প্রতি, জেদ্দা হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টে মুনিরুদ্দীন নামক এক মুরীদকে চট্টগ্রামের কাগতিয়া খানকা থেকে তাওয়াজ্জুহ্ প্রদান করার সাথে সাথে তিনি বেহুঁশ হয়ে পড়ে যান। পাশে উপস্থিত লোকেরা হতভম্ব হয়ে পড়েন এবং পরে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলেন, জনাব মুনিরুদ্দীন নিয়ত করার পর পরিষ্কারভাবে দেখলেন, তার সীনার মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে এক এক টুকরো নূর ঢুকে পড়ছে।
এবং ঐ নূর তাকে এমনভাবে ২/৩ টি ধাক্কা দেয়, যার দরুন সে সহ্য করতে না পেরে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। সকল পীর হযরত শেখ সৈয়দ আবদুল কাদের জিলানী (রঃ) বাগদাদ থেকে “তাওয়াজ্জুহ্ বিল গায়েব” দিয়ে হযরত শেখ সানয়ানী (রঃ) কে হজ্ব যাত্রার পথে ইহুদী মহিলার চক্রান্ত থেকে রক্ষা করে পুণরায় তাঁকে বেলায়ত দান করেছিলেন। নির্ভযোগ্য তফসীরে “ছা’বীতে” আছে, হযরত এয়াকুব (আঃ) ও নিজ বাসস্থান কে’নান থেকে তাওয়াজ্জুহ্ দিয়ে মিশরে হযরত ইউসুপ (আঃ) কে জোলায়খার চক্রান্ত থেকে রক্ষা করেছিলেন। এভাবে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে তাওয়াজ্জুর মাধ্যমে মুরীদদের ক্বলবে আল্লাহর ভয় ও যিকির চালু করিয়ে দিয়ে ছিলেন হযরত আযমগড়ী (রঃ) ও তারই অন্যতম সুযোগ্য খলিফা চট্টগ্রাম হালিশহর অধিবাসী বাংলাদেশ খ্যাত মহান অলী হযরত হাফেজ মুনিরুদ্দীন (রঃ)। হযরত হাজে মুনিরুদ্দীন (রঃ) এর খরিফার মধ্যে আল্লাহর রহমতে মুষ্টিমেয় কয়েজন “তাওয়াজ্জুহ্ বিল গায়েব” প্রদান করতে তম্মধ্যে কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের মহান মোর্শেদ গাউছুল আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী একজন।
কাগতিয়ার মহান মোর্শেদ গাউছুল আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী কেবলা এমনভাবে শরীয়তকে মনে প্রাণে আকঁড়ে ধরেছেন। শরীয়তের বাইরে একচুল পরিমাণ ও চলেন না তিনি। কোন নারী তো তাঁর সামনে যেতেই পারে না। এমন কি রাস্তাঘাটে যাতে নারী চোখে না পড়ে, সেজন্য তিনিগর্দান ঝুকিয়ে চলাফেরা করতে করতে সম্পূর্ণ গর্দান নীচের দিকেই ঝুঁকে পড়েছে। তাচাড়া ও ফটো তোলা বিষয়ে তাঁর কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সম্প্রতি, তিনি মুরীদদের উদ্দেশ্য বলেছেন, “আমাকে নিয়ে সমালোচনাকারীদের কথায় তোমরা ঝগড়ায় লিপ্ত হয়োনা, সমালোচনা কারীরা সমালোচনা করে আমার বিন্দু মাত্র ও ক্ষতি সাধন করতে পারবেনা। কারণ, আল্লাহ তাঁর যে নূরকে উপরে তুলতে চাইবেন। কারো সাধ্য নেই, সেটাকে নীচে নামিয়ে আনার”।