بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ
(আল্লাহর নামে আরম্ভ, যিনি অত্যন্ত দয়ালু ও পরম করুণাময়।)
দরসুল হাদিস
عن عبد الله بن عمرو قال قال رسول الله (صلى الله عليه وسلم) بلغوا عنى ولو اية و حدثوا عن بنى إسرائيل و لا حرج و من كذب على متعمدا فليتبوأ من النار --- (رواه البخارى- مشكوة شريف)
সরল তরজুমা:: হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত- তিনি বলেন,আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা) ফরমায়েছেন, আমার পক্ষ হইতে একটি আয়াত (বাণী) হলেও মানুষের কাছে পৌঁছাতে থাক। বনী ইসরাঈলের নিকট হতে প্রাপ্ত বিভিন্ন ঘটনার বর্ণনা করতে পার,ইহাতে কোন দোষ নেই -(তবে হালাল-হরামের বিধান নয়, যা অপর হাদীস শরীফে নিষেধ আছে)। আর যে ব্যক্তি ইচ্ছা করে আমার নামে মিথ্যা (হাদীস) বলে তাহার ঠিকানা সে যেন দোযখে ঠিক(তালাশ) করে নেয়। (বুখারী শরীফ,মেশকাত শরীফ)
عن ابى هريرة (رضي الله عنه) قال قالوا يا رسول الله (صلى الله عليه وسلم) متى وجبت لك النبوة قال و ادم بين الروح والجسد - (رواه الترمذي)
সরল অনুবাদ:: হযরত আবু হুরায়রা (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত - তিনি বলেন, একদা সাহাবায়ে কিরাম (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম) আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা) কখন হতে আপনার জন্য নবুয়াত ওয়াজিব হয়েছে ? তিনি ইরশাদ করেন - (মানব পিতা) আদম (আলাইহিস সালাম) যখন রুহ এবং শরীরের মধ্যে ছিলেন। (তিরমিযী শরীফ ও মেশকাত শরীফ)
عن ابى قتادة (رضي الله عنه) قال سئل رسول لله (صلى الله عليه وسلم ) عن صوم الاثنين فقال فيه ولدت و فيه انزل علي (رواه مسلم)
বঙ্গানুবাদ:: হযরত আবু কাতাদাহ (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত- তিনি বলেন- একদা নবী কারীম (দ.) এর কাছে সোমবার দিন (নফল) রোজা রাখার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে জবাবে তিনি (দ.) ইরশাদ ফরমান - সোমবার দিন আমি দুনিয়াতে আগমন করেছি এবং সোমবারেই আমার উপর কোরআনুল কারীম অবতীর্ণ হয়েছ। (মুসলিম ও মেশকাত শরীফ)
عن ابى هريرة (رضي الله عنه) ان رسول الله (صلى الله عليه وسلم) قال من رأنى فى المنام فقد رأنى فان الشيطان لا يتمثل فى صورتي -- (متفق عليه)
ভাষান্তর:: হযরত আবু হুরায়রা (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত- নবী কারীম (দ.) ইরশাদ ফরমান- যে ব্যক্তি আমাকে স্বপ্নের মধ্যে দেখল - সে সত্যিই আমাকে দেখেছে। কেননা শয়তান আমার ছুরত বা আকৃতি ধারন করতে পারে না। (বুখারী,মুসলিম ও মেশকাত শরীফ-)
عن انس (رضي الله عنه) قال خدمت النبي (صلى الله عليه وسلم) عشر سنين فما فال لي اف ولا لم صنعت ولا الا صنعت - (متفق عليه)
অনুবাদ:: হযরত আনাস (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত- তিনি বলেন, আমি নবী কারীম (দ.) এর দশ বছর খেদমত করেছি (ব্যক্তিগত খাদেম হিসেবে)। এ দীর্ঘ সময়ে তিনি কোন দিন আমার উপর অসন্তুষ্ট হয়ে -উফ- শব্দটিও বলেননি। এমনকি এটা কেন করেছ অথবা ওটা কেন কর নাই-তাও কোন দিন বলেননি। (বুখারী ও মুসলিম শরীফ মেশকাত শরীফ)
عن ابي هريرة (رضي الله عنه) قآل قيل يا رسول الله (صلى الله عليه وسلم) ادع علي المشركين قال اني لم ابعث لعانا و انما بعثت رحمة- (رواه مسلم)
তরজুমা :: হযরত আবু হুরায়রা (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহ) হতে বর্ণিত- একদা সাহাবায়ে কিরামের (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম) পক্ষ হতে আরজ করা হলো- হে আল্লাহর রাসূল (দ.)! মোশরিকদের জন্য অভিশাপ করুন। তা শুনে নবী কারীম (দ.) ফরমান- আমাকে লা'নতকারী হিসেবে পাঠানো হয়নি- আমাকে পাঠানো হয়েছে রহমত স্বরূপ। (মুসলিম শরীফ ও মেশকাত শরীফ)
عن أنس (رضي الله عنه) ان عمر بن الخطاب (رضي الله عنه) كان اذا قحطوا استسقي بالعباس بن عبد المطلب فقال اللهم انا كنا نتوسل اليك بنبينا فتسقينا و انا نتوسل اليك بعم نبينا فاسقنا قال فيسقون - (رواه البخاري)
বঙ্গানুবাদ:: হযরত আনাস (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহ) হতে বর্ণিত যে, হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহ) এর শাসনামলে যখন অনাবৃষ্টির কারনে দুর্ভিক্ষ দেখা দিত-তখন হযরত আব্বাস ইবনে আব্দিল মোত্তালিবের পরিচালনায় বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করতেন।তিনি এভাবে বলতেন- "হে আল্লাহ আমরা আমাদের নবী কারীম (দ.) কে ওসীলা করে আপনার দরবারে বৃষ্টির জন্য ফরিয়াদ করতাম - আপনি বৃষ্টি দিতেন। এখন আমরা নবীজির (দ.) প্রিয় চাচাকে ওসীলা করে আপনার দরবারে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করছি- আমাদেরকে বৃষ্টি দান করুন। তখন আল্লাহর পক্ষ থেকে বৃষ্টি প্রদান করা হইত। (বুখারী শরীফ ও মেশকাত শরীফ)
عن شريح ابن عبيد ذكر أهل الشام عند علي (رضى الله عنه) و قيل العنهم يا اميرالمؤمنين قال لا انى سمعت رسول الله (صلى الله عليه وسلم) يقول الابدال يكونون بالشام وهم أربعون رجلا كلما مات رجل ابدل الله مكانه رجلا يسقى بهم الغيث و ينصر بهم علي الاعداء ويصرف عن اهل الشام بهم العذاب- (رواه احمد - مشكوة شريف)
তরজুমা :: হযরত শুরাইহ ইবনে ওবাইদ (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত- তিনি বলেন- একদা হযরত আলী (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) এর কাছে শাম দেশের লোকদের (বিদ্রোহ বা বগাওতের) কথা আলোচনা হইল; আরো বলা হলো, হে আমীরুল মো'মেনীন! আপনি তাদের জন্য লা'নত করুন। তিনি বলেন- না। কেননা আমি নবী কারীম (দ.) কে ইরশাদ ফরমাতে শুনেছি যে, আবদালেরা (আউলিয়ায়ে কিরামের এক বিশেষ শ্রেনী) শাম দেশেই হবে। তারা সংখ্যায় চল্লিশ জন হবেন। যখন তাদের যে কোন একজন মারা যায়,তখন আল্লাহ তায়ালা তার স্হলে অন্য একজনে নিযুক্ত করেন। তাদের ওসীলায় জমিনে বৃষ্টি হয়, দোশমনের বিরুদ্ধে সাহায্য পাওয়া যায়, তাদের ওসীলায় শামবাসীর আযাব দূরীভূত হয়। (মুসনাদে আহমদ ও মেশকাত শরীফ)
عن ابي هريرة (رضي الله عنه) عن النبي (صلى الله عليه وسلم) قال أسعد الناس بشفاعتى يوم القيامة من قال لا اله الا الله خالصا من قلبه او نفسه- (رواه البخارى- مشكوة)
ভাষান্তর:: হযরত আবু হুরায়রা (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) হযরত নবী কারীম (দ.) হতে বর্ণনা করেন - তিনি (দ.) ফরমায়েছেন- কিয়ামতের দিন আমার শাফায়াতে (সুপারিশে) সেই ব্যক্তি ধন্য হবেন,যার ক্বালব বা নফস খালিস ভাবে একনিষ্ঠতার সাথে *লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ* এর সাক্ষ্য দিয়েছে। (বুখারী শরীফ ও মেশকাত শরীফ)
عن انس (رضي الله عنه) ان النبي (صلى الله عليه وسلم) قال شفاعتى لاهل الكبائر من امتى- (رواه الترمذي و ابوداؤد)
বঙ্গানুবাদ:: হযরত আনাস (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহ) হতে বর্ণিত- নবী কারীম ( দ.) ইরশাদ ফরমান-- আমার উন্মতের বড় বড় গুনাহগারদের জন্যেও আমার শাফায়াত তথা সুপারিশ থকবে। (তিরমিযী শরীফ আবূদাউদ শরীফ ও মেশকাত শরীফ)