بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ
(আল্লাহর নামে আরম্ভ, যিনি অত্যন্ত দয়ালু ও পরম করুণাময়।)
দরসুল কোরআন
ياأيها الناس قد جاءتكم موعظة من ربكم و شفاء لما فى الصدور- و هدى و رحمة للمؤمنين - (يونس - ٥٧)
বঙ্গানুবাদ :: “হে মানবকুল! তোমাদের নিকট তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং অন্তরসমূহের বিশুদ্ধতা, হেদায়েত এবং রহমত ঈমানদারদের জন্য।” - [সূরা ইউনুস, আয়াত - ৫৭]
قل بفضل ألله و برحمته فبذالك فليفرحوا- هو خير مما يجمعون - (يونس - ٥٨)
বঙ্গানুবাদ :: “হে হাবীব (দ.)! আপনি বলুন, আল্লাহরই অনুগ্রহ ও তাঁরই দয়া, এবং সেটারই উপর তাদের আনন্দ করা উচিত। তা তাদের সমগ্র ধন-দৌলত অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।” - [সূরা ইউনুস, আয়াত - ৫৮]
الم تر الى الذين بدلوا نعمت الله كفرا (سورة إبراهيم- ٢٨)
ভাষান্তর :: “ওগো রাসূল (দ.)! আপনি কি ঐ সমস্ত লোকেদেরকে অবলোকন করেন নি ? (নিশ্চয়ইকরেছেন)! যারা আল্লাহর নেয়ামতকে অকৃতজ্ঞতাবশতঃ পরিবর্তন করেছে। (নবী কারীম (দ.) কে আল্লাহর নেয়ামত হিসেবে গ্রহন না করে অকৃতজ্ঞতার পরিচয় দিচ্ছে)” - [সূরা ইব্রাহিম, আয়াত - ২৮]
يعرفون نعمت ألله ثم ينكرونها و اكثرهم الكافرون- (سورة النحل - ٨٣)
সরল তরজুমা :: “তারা আল্লাহর নেয়ামত তথা অনুগ্রহ চিনে, অতঃপর তা অস্বীকার করে এবং তাদের মধ্যে অধিকাংশই কাফের।” - [সুরা নাহল, আয়াত - ৮৩]
উল্লেখ্য যে, উল্লেখিত তিনটি আয়াতে কারীমাতে রাহমাতুল্লাহ(আল্লাহর রহমত), ফাদলুল্লাহ(আল্লাহর অনুগ্রহ), নেয়'মাতুল্লাহ(আল্লাহর নেয়ামত বা দয়া) দ্বারা আল্লাহর হাবীব, নবী কারীম (দ.) কে বুঝানো হয়েছে। সুতরাং আমরা গুনাহগার নবী কারীম (দ.) কে পেয়েছি, এজন্যে শরীয়ত সম্মত খুশি ও আনন্দ উদযাপন করে আল্লাহর নেয়ামতের স্মরণ করে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা অপরিহার্য।
اِنَّ اللّٰهَ وَ مَلٰٓئِکَتَهٗ یُصَلُّوۡنَ عَلَی النَّبِیِّ ؕ یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا صَلُّوۡا عَلَیۡهِ وَ سَلِّمُوۡا تَسۡلِیۡمًا - (سورة الأحزاب - ۵۶)
সরল অনুবাদ :: “নিশ্চয়ই আমি (আল্লাহ্) স্বয়ং এবং আমার ফেরেস্তাগণ নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর দরুদ পাঠ পূর্বক সালাম প্রেরণ করিয়া থাকি; হে মুমিনগণ তোমরাও তাঁহার উপর দরুদ পাঠ কর এবং যথাযথ ভাবে সালাম প্রেরণ কর।” - [সুরা আল আহ্যাব, আয়াত - ৫৬]
وَ لَوۡ اَنَّهُمۡ اِذۡ ظَّلَمُوۡۤا اَنۡفُسَهُمۡ جَآءُوۡکَ فَاسۡتَغۡفَرُوا اللّٰهَ وَ اسۡتَغۡفَرَ لَهُمُ الرَّسُوۡلُ لَوَجَدُوا اللّٰهَ تَوَّابًا رَّحِیۡمًا (سورة النساء - ۶۴)
সরল অনুবাদ :: “যদি তারা নিজেদের উপর জুলুম করার পর আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনার জন্য আপনার নিকট আসত এবং আপনি রাসূলও তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতেন তবে অবশ্যই তারা আল্লাহকে ক্ষমাকারী ও দয়ালু হিসেবে পেত।” - [সূরা নিসা, আয়াত - ৬৪]
الا ان أولياء الله لاخوف عليهم ولا هم يحزنون - (يونس- ٦٢)
সরল অনুবাদ :: “স্মরণ রেখো/সাবধান! আল্লাহর অলি বা প্রিয় বান্দাগন নিঃসন্দেহে নির্ভয় এবং নিশ্চিন্ত।” - [সুরা আল ইউনুছ, আয়াত-৬২]
الذين آمنوا و كانوا يتقون - (يونس - ٦٣)
সরল অনুবাদ :: “ঐ সব লোক,(আউলিয়া আল্লাহ) যারা ঈমান এনেছে এবং খোদাভীতি অবলম্বন করে।” - [সুরা আল ইউনুছ, আয়াত-৬৩]
لهم البشرى فى الحيوة الدنيا و فى الاخرة- لا تبديل لكلمات الله- ذلك هو الفوز العظيم - (يونس - ٦٤)
সরল অনুবাদ :: “তাদের জন্য (আউলিয়ায়ে কিরামের জন্য) সুসংবাদ রয়েছে পার্থিব জীবনে এবং পরকালে। আল্লাহর বানীসমূহ পরিবর্তন হতে পারেনা। এটাই হচ্ছে মহা সাফল্য। (আল্লাহর ওয়াটার বিপরীত হতে পারে না, যা তিনি নিজ কিতাবে এবং আপন রসূলগনের ভাষায় আপন ওলীগন ও আপন আনুগত্যশীল বান্দাদের সাথ করেছেন)।” - [সুরা আল ইউনুছ, আয়াত-৬৪]
ياأيها الذين آمنوا التقوا الله وابتغوا اليه الوسيلة وجاهدوا فى سبيله لعلكم تفلحون - (المائدة - ٣٥)
সরল তরজুমা :: “হে ঈমানদারগন!আল্লাহকে ভয় করো এবং তারই দিকে মাধ্যম তালাশ করো (যার মাধ্যমে তোমরা তাঁর নৈকট্য পেতে পারো) এবং তাঁর পথে জিহাদ করো এ আশায় যে, সফলতা পেতে পারো।” - [সুরা মায়িদা, আয়াত-৩৫]
ياأيها الذين آمنوا التقوا ألله وكونوا مع الصادقين- (سورة التوبة-١١٩)
সরল তরজুমা :: “হে ঈমানদারগন! আল্লাহকে ভয় করো (আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করা বর্জন করো) এবং সত্যবাদীদের সাথে থাকো।(যারা সত্যিকারের ঈমানদার ও নিষ্ঠাবান-যারা রাসূলে কারীম (দ.) কে নিষ্ঠার সাথে সত্যয়ন ও অনুসরণ করে)।” - [সুরা আত-তাওবা, আয়াত-১১৯]
مَنۡ یَّهۡدِ اللّٰهُ فَهُوَ الۡمُهۡتَدِ ۚ وَ مَنۡ یُّضۡلِلۡ فَلَنۡ تَجِدَ لَهٗ وَلِیًّا مُّرۡشِدًا (سورة الكهف-۱۷)
সরল তরজুমা :: “আল্লাহ যাকে সৎপথে চালান, সেই সৎপথ প্রাপ্ত এবং তিনি যাকে হেদায়াত দান করেন না, আপনি কখনও তার জন্যে সাহায্যকারী মুর্শিদ পাবেন না।” - [সূরা কাহফ, আয়াত-১৭]
و اذا سمعوا ما انزل الى الرسول ترى أعينهم تفيض من الدمع مما عرفوا من الحق يقولون زبنا امنا فاكتبنا مع الشاهدين- ( المائدة-٨٣)
সরল তরজুমা :: “এবং তারা যখন শ্রবন করে সেটা, যা রাসুলের ( দ.) প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে (কোরআন শরীফ), তখন তাদের চক্ষসমুহ দেখো- অশ্রতে ভরে উঠেছে, (এটা তাদের কোমল অন্তরের রোদনের বিবরন) এ কারনে যে, তারা সত্যকে চিনে নিয়েছে। তারা বলে, হে প্রতিপালক আমাদের! আমরা ঈমান এনেছি (নবী কারীম (দ.) এর উপর এবং আমরা তাঁর সত্যতার পক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছি)। সুতরাং আমাদেরকে সত্যের সাক্ষীগনের মধ্যে লিপিবদ্ধ করে নিন-(নবী কারীম (দ.) এর উম্মতের মধ্যে দাখিল করেন,যিনি কিয়ামত দিবসে সমস্ত উম্মতের সাক্ষী হবেন)।” - [সুরা মায়িদা, আয়াত-৮৩]
انما المؤمنون الذين إذا ذكر الله وجلت قلوبهم و اذا تليت عليهم آياته زادتهم ايمانا و علي ربهم يتوكلون- (الانفال -٢)
সরল তরজুমা :: “ঈমানদার হচ্ছে তারাই, যখন আল্লাহতায়ালাকে স্মরণ করা হয় তখন তাদের হৃদয় আল্লাহর ভয়ে প্রকম্পিত হয় (আল্লাহর মহত্ব,বড়ত্ব ও মহিমার কারনে) এবং যখন তাদের নিকট তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করা হয়, তখন তাদের ঈমানে উন্নতি হয় এবং নিজেদের প্রতিপালকের উপর নির্ভর করে (স্বীয় যাবতীয় কার্যাদি তারই হাতে সোপর্দ করে)।” - [সুরা আনফাল, আয়াত-২]
الله نزل احسن الحديث كتابا متشابها مثاني تقشعر منه جلود الذين يخشون ربهم ثم تلين جلودهم و قلوبهم الي ذكر الله - (سورة الزمر - ٢٣)
সরল তরজুমা :: “আল্লাহ অবতীর্ণ করেছেন সর্বাপেক্ষা উত্তম কিতাব (কোরআনুল কারীম),যা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত এক ধরনেরই (সৌন্দর্যের মধ্যে), পুনঃপুনঃ বর্ণনাসম্পূর্ন,(যে,এর মধ্যে প্রতিশ্রুতির সাথে শাস্তির হুমকিও আছে,নির্দেশের সাথে নিষেধাজ্ঞাও আছে এবং সংবাদের সাথে বিধি- বিধানও রয়েছে) সেটার কারনে (ভয়ে) লোম খাড়া হয়ে যায় তাদের শরীরের উপর, যারা আপন প্রতিপালককে ভয় করে, অতঃপর তাদের চামড়া ও হৃদয় নম্র হয়ে পড়ে আল্লাহর স্মরনের প্রতি আগ্রহে (যা আল্লাহর ওলিগনের বৈশিষ্ট্য)।” - [সুরা যুমার, আয়াত-২৩]
يا ايها الناس فد جاءكم برهان من ربكم و انزلنا البكم نورا مبينا - (سورة النساء- ١٧٤)
সরল অনুবাদ:: “হে মানবকুল! নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণ এসেছে, (সুস্পষ্ট প্রমাণ" মানে নবী কারীম (দ.)) এবং আমি তোমাদের প্রতি উজ্জ্বল আলো (পবিত্র কোরআনুল কারীম) অবতীর্ণ করেছি।” - [সুরা নিসা, আয়াত-১৭৪]
فاالذين امنوا به وعزروه و نصروه واثبعوا النور الذي أنزل معه - اولئك هم المفلحون -- (الاعراف-١٥٧)
ভাষান্তর :: “সুতরাং ঐসব লোক, যারা তাঁর উপর (মুহাম্মদ (দ.) এর উপর) ঈমান এনেছে, তাঁকে সন্মান করেছে, তাঁকে সাহায্য করেছে এবং ঐ নূরের তথা কোরআনুল কারীমের অনুসরণ করেছে, যা তাঁর সাথে তথা নবী কারীম (দ.) এর সাথে অবতীর্ণ হয়েছে। তারাই সফলকাম হয়েছে। অর্থ্যাৎ যারা নবী কারীম (দ.) এর উপর ঈমান এনে সন্মানের সাথে আল্লাহর হাবীবকে (দ.) সার্বিক সহযোগিতা করেছে এবং কোরআনুল কারীমের নূর অর্জন করে আপন সিনাকে আলোকিত করেছে, তারাই সফলকাম হয়েছে।” - [সুরা আ'রাফ, আয়াত-১৫৭]
فامنوا باالله و رسوله و النور الذى انزلنا-و الله بما تعملون خبيرا- (سورة تغابن- ٨)
সরল অনুবাদ:: “সুতরাং তোমরা ঈমান আনো আল্লাহ ও তাঁর রাসূল এবং ঐ নুরের উপর,যা আমি অবতীর্ণ করেছি। এবং আল্লাহতায়ালা তোমাদের কার্যাদি সম্পর্কে অবহিত। (নূর দ্বারা "কোরআনুল কারীম" বুঝানো হয়েছে। কেননা, তা দ্বারা পথভ্রষ্টতার পুন্জিভূত অন্ধকার দূরীভূত হয় এবং প্রত্যেক কিছুর বাস্তব অবস্থা প্রকাশ পায়)” - [সুরা তাগাবুন, আয়াত-৮]
ان فى خلق السماوات والأرض واختلاف الليل والنهار لآيات لأولى الألباب- (سورة العمران - ١٩٠)
বঙ্গানুবাদ:: “নিশ্চয়ই আসমানসমূহ ও যমিনের সৃষ্টি এবং রাত ও দিনের পরস্পর পরিবর্তনের মধ্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে- বিবেকবানদের জন্য।” - [সুরা আল ইমরান, আয়াত-১৯০]
الذين يذكرون الله قياما و قعودا و على جنوبهم و يتفكرون فى خلق السماوات والأرض- ربنا ما خلقت هذا باطلا سبحانك فقنا عذاب النار- (سورة العمران -١٩١)
বঙ্গানুবাদ:: “যারা আল্লাহর স্মরন করে - দাঁড়িয়ে,বসে এবং করটের উপর শুয়ে এবং আসমানসমূহ ও যমিনের সৃষ্টির মধ্যে গভীর চিন্তা-ভাবনা করে; হে প্রতিপালক আমাদের! তুমি এটা নিরর্থক সৃষ্টি করোনি; পবিত্রতা তোমারই, সুতরাং আমাদেরকে দোযখের শাস্তি থেকে রক্ষা করো। অর্থ্যাৎ আল্লাহর বৈচিত্র্যময় সৃষ্টির গবেষনা তথা মোরাকাবা করার কথা বর্ণিত হয়েছে এবং সর্বাবস্হায় কলবী যিকিরের মাধ্যমে আল্লাহর স্মরনে নিমগ্ন থাকার প্রতি ইঙ্গিত প্রদান করা হয়েছে।” - [সুরা আল ইমরান, আয়াত-১৯১]
سَنُرِیۡهِمۡ اٰیٰتِنَا فِی الۡاٰفَاقِ وَ فِیۡۤ اَنۡفُسِهِمۡ حَتّٰی یَتَبَیَّنَ لَهُمۡ اَنَّهُ الۡحَقُّ ؕ اَوَ لَمۡ یَکۡفِ بِرَبِّکَ اَنَّهٗ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ شَهِیۡدٌ (سورة فصلت - ۵۳)
সরল অনুবাদ:: "তাদের নিকট সত্য প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত প্রত্যক্ষভাবে সমগ্র জগতে এবং তাদের অন্তরে আমার নিদরশন সমুহ অতি সত্তর প্রকাশ করব" - [সূরাঃ হা-মীম আস-সাজদা, আয়াত -৫৩]