প্রিয় রাসূলের (দঃ) আদর্শ বাস্তবায়নে বেনজির ব্যক্তিত্ব হযরত গাউছুল আজম (রা.)

 

প্রিয় রাসূলের আদর্শ বাস্তবায়নে বেনজির ব্যক্তিত্ব হযরত গাউছুল আজম (রা.)

চট্টগ্রাম বায়েজিদস্থ গাউছুল আজম সিটিতে মাহবুবে ছোবহানী, কুতবে রাব্বানী, গাউছুল আজম হযরত শায়খ ছৈয়্যদ আব্দুল কাদের জিলানী (রা.) এর ওফাত বার্ষিকী এবং খলিলুল্লাহ, আওলাদে মোস্তফা, খলিফায়ে রাসূল (দ.) হযরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম (রা.) এর স্মরণে ৬৯তম ফাতেহায়ে ইয়াজদাহুম মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার (০৬ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত এই মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের মাননীয় মহান মোর্শেদ, আওলাদে রাসূল হযরতুলহাজ্ব আল্লামা অধ্যক্ষ শায়খ ছৈয়্যদ মোর্শেদে আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী সাহেব।

প্রিয় রাসূলের আদর্শ বাস্তবায়নে বেনজির ব্যক্তিত্ব হযরত গাউছুল আজম (রা.) উল্লেখ্য করে প্রধান অতিথি বলেন, যুগেযুগে মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকার জন্য অসংখ্য নবী ও রাসূল প্রেরিত হয়েছেন এ ধরাতে। শেষ নবী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন ছৈয়্যদুল মুরসালিন নবী করিম (দ.)। নবুয়তের পরিসমাপ্তির পর এ মহান দায়িত্ব পালন করে আসছেন অলি আল্লাহগণ। এরই ধারাবাহিকতায় মাহবুবে ছোবহানি কুতুবে রাব্বানি হযরত গাউছে পাক জিলানীর শুভ আবির্ভাব। যিনি বেলায়তের ভূবনে স্বমহিমায় সমুজ্জ্বল। এলমে শরীয়তে যেমন অনন্য ছিলেন এলমে মারেফতেও ছিলেন তার চেয়ে বেশি আলোকিত। কালের পরিক্রমায় আমরাও পেয়েছি এমন এক মহান মনীষীকে যিনি মকামে গাউছিয়তে অধিষ্ঠিত, শুধু তাই নয় খলিফায়ে রাসুলের মর্যাদায়ও ভূষিত হয়েছেন। নবীজির অনুসরণে কিংবা নবীজিকে মুহাব্বতের দিক দিয়ে যিনি অতুলনীয়। তিনি নিজে যেমন নবীজির মুহাব্বতকে ধারণ করেছেন, তেমনি স্বীয় অনুসারীদের হৃদয়ে হৃদয়ে এশকে রাসূলকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এবং সুন্নাতে রাসূলকে জিন্দা করেছেন। মানবজাতিকে বিশেষ করে যুব সমাজকে ফিতনার অন্ধকার থেকে আলোর দিকে নিয়ে এসেছেন। দরুদ শরীফকে করে দিয়েছেন জীবনের আবশ্যিক একটা কাজ হিসেবে। মোরাকাবা, ফয়েজে কুরআন, তাহাজ্জুদ ও জিকরে জলী করেছেন প্রতিদিনের অত্যাবশ্যকীয় আমল। হারাম-হালালের পার্থক্য নিরুপন করে জীবন যাপনের শিক্ষাও তিনি দিয়েছেন। শিরক ও বিদআতমুক্ত দ্বীনের সৌন্দর্যকে তুলে ধরেছেন বিশ্বজোড়া রাসুলনোমা তরিক্বতের প্রতিটি পদক্ষেপে। অগণিত রজনীর রোনাজারির বিনিময়ে গঠন করেছেন মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ। যা মানুষকে ভালো কাজের পথে ডাকে এবং মন্দ কাজ হতে নিষেধ করে। এ মহান কাজে তিনি এতটাই সফল যে কালের শ্রেষ্ঠ কিংবদন্তীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। দস্তগীরির দস্তকে প্রসারিত করে বেভুল মানুষকে তুলে এনেছেন হতাশা থেকে আশার দিকে, গুনাহ হতে পূণ্যের দিকে, লৌকিকতা থেকে এখলাসের দিকে। মানুষের জন্য সর্বদা ক্রন্দন করে যাঁর হৃদয়। সর্বাবস্থায় রত থাকেন উম্মতে মুহাম্মদীর কল্যাণের ফিকিরে। এমন মহান গাউছুল আজম ইতিহাসে বিরল। যুগ যুগ ধরে প্রজন্ম হতে প্রজন্মে এই মহান মনীষীর ত্যাগ ও মহিমার কথা লিপিবদ্ধ থাকবে ইনশাআল্লাহ।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট ও সিনেট সদস্য ও মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশের সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আবুল মনছুর এর সভাপতিত্বে মাহফিলে বক্তব্য রাখেন মাওলানা মুহাম্মদ শফিউল আলম, মাওলানা মুহাম্মদ কারিমুল মাওলা, মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।

মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ এর উদ্যোগে ফাতেহা-এ ইয়াজদাহুম মাহফিল উপলক্ষে গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে ছিল পবিত্র খতমে কোরআন, ফাতেহা-এ ইয়াজদাহুম শীর্ষক সেমিনার, বাদে আছর তরিক্বতের বিশেষ পদ্ধতিতে ফয়েজে কুরআন প্রদানের মাধ্যমে নূরে কুরআন বিতরণ।

বাদে নামাজে মাগরিব ফাতেহা শরীফ আদায়, ঈছালে ছাওয়াব, মোরাকাবা ও জিকিরে গাউছুল আজম মোর্শেদী। বাদে এশা মাননীয় মোর্শেদে আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী ছাহেবের নূরানি তক্বরির মোবারক, মিলাদ, কিয়াম, আখেরী মোনাজাত এবং তাবাররুক বিতরণ ।

মিলাদ ও কিয়াম শেষে প্রধান অতিথি দেশ, জাতি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ্র ঐক্য, সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি, অসহায় নির্যাতিত মুসলমানদের হেফাজত এবং দরবারের প্রতিষ্ঠাতা গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আন্হুর ফুয়ুজাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন।

 

 

 

 

গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ