ওমানে মুনিরীয়া যুব তবলীগের এশায়াত সেমিনারে জনতার ঢল
পবিত্র জশনে জুলুছে ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উদযাপন এবং খলিলুল্লাহ, আওলাদে মোস্তফা, খলিফায়ে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম, হযরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর স্মরণে "সুন্নতে মোস্তফা অনুশীলনে অনন্য পাঠশালা কাগতিয়া আলিয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের তরিক্বত" শীর্ষক এশায়াত সেমিনার করেছে মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ ১৬৩ নং আল সুইক শাখা।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) সালতানাত অব ওমানের আল সুইকস্থ বিদিয়া ছানাইয়াতে মুহাম্মদ সোহেল এর পবিত্র কোরআন থেকে তেলোয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া সেমিনারে পবিত্র নাতে মোস্তফা (দ.) পেশ করেন মুহাম্মদ জাবেদ এবং পবিত্র খছিদা শরীফ পেশ করেন যথাক্রমে মুহাম্মদ জুয়েল ও মুহাম্মদ জাবেদ হোসেন।
সালতানাত অব ওমানের বিশিষ্ট প্রবীণ কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব ও সংগঠনের সভাপতি মুহাম্মদ নাছির মিয়া এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন মাওলানা মুহাম্মদ মঈনুদ্দিন।
প্রবন্ধের আলোকে প্রধান বক্তা বলেন, রাব্বুল আলামীন কোরআনে বহু আয়াতে প্রিয় নবী (দ.) এর পবিত্র বিলাদত শরীফ উপলক্ষে শোকর আদায় ও আনন্দ প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা সকলে অবগত যে সমস্ত রহমতের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ রহমত হচ্ছে প্রিয় নবী (দ.)। এতে কারো দ্বিমত পোষণের কোন সুযোগ নেই। যদি এটা স্বীকার করতে কোন দ্বিমত না থাকে তাহলে এই রহমতের শোকরিয়া আদায়ে কোন দ্বিমত পোষণ করা যাবেনা। মুমিনরা সর্বদা রাব্বুল আলামীনের দরবারে শুকরিয়া জ্ঞাপন করেন। সূরা ইউনুস এর ৫৮ নং আয়াতে বলা হয়েছে " হে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম,আপনি বলে দিন আল্লাহ পাকের ফজল ও রহমতের জন্য তারা যেন আনন্দ প্রকাশ করে"। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নির্দেশ হচ্ছে বান্দা যেকোন রহমত পাওয়ার সাথে সাথে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে, আনন্দ প্রকাশ করবে। সৃষ্টিকর্তার রহমতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশে অনীহা কোন সুস্থ, বিবেকবান মুমিনের কাজ হতে পারে না। মুমিনের পরিচয় হচ্ছে রহমতের জন্য শোকরিয়া আদায় করা। এতে রহমতের পরিমাণ বেড়ে যায়। ঈদে মিলাদুন্নবি (দ.) হচ্ছে রাব্বুল আলামীনের দরবারে শুকরিয়া আদায় ও আনন্দ প্রকাশের একটি ধর্মীয় উৎসব।
তিনি আরও বলেন আল্লাহ প্রদত্ত নেয়ামতের স্মরণ করার নির্দেশ দিয়ে কোরআনে করিমের সূরা আল ইমরান এর ১০৩ নং আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ঘোষণা দিয়েছেন "তোমরা আল্লাহর নেয়ামতকে স্মরণ কর"। নিশ্চয়ই উম্মতে মুহাম্মদী স্বীকার করে নিবেন যে আল্লাহ প্রদত্ত সর্বশ্রেষ্ঠ নেয়ামত প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ।
তিনি আরও বলেন একবিংশ শতাব্দীতে এসে নষ্ট এই বিশ্বে এমনই এক আধ্যাত্মিক কালজয়ী মহাপুরুষের আগমন ঘটেছিলো যিনি হলেন কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা খলিলুল্লাহ, আওলাদে মোস্তফা, খলিফায়ে রাসূল(দ.), হযরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু, যার আপাদমস্তক সুন্নতে মোস্তফায় অলংকৃত, যার শৈশবেও প্রতিফলিত হয় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতিচ্ছবি, যার চলন বলন কথন দর্শনে ছিল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পূর্ণ অনুসরণ। আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল (দ:) কে হৃদয় দিয়ে পরিপূর্ণ এখলাস, ভালোবাসায় এমন ভাবে ধারন করেছেন যার ফলস্বরূপ তিনি বেলায়তের সর্বোচ্চ স্থানে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। খোদা তাকে আদর করে খলিলুল্লাহ বানিয়েছেন, নবী তাকে ডেকে নিয়ে অলৌকিকভাবে বায়াত করিয়ে খলিফায়ে রাসূলের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছেন। এ যেনো বেলায়তের ইতিহাসে নবযুগের উন্মোচন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন প্রবন্ধের লেখক, প্রবন্ধকার মুহাম্মদ পামিরুল আজিম আরফান এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন মৌলানা মুহাম্মদ মহিউদ্দিন।
সেমিনার শুরু হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন দেশের মুসলিম জনতার উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে সেমিনার প্রাঙ্গণ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ওমানের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে আগত তরিক্বতপন্থি, মেহমান, বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ এবং প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
সেমিনার শেষে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি, অগ্রগতি ও উপস্থিত সকলের ইহকালীন কল্যাণ, পরকালীন মুক্তি ও কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের মাননীয় মহান মোর্শেদে আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী ছাহেবের হায়াতে আবেদী, শেফায়ে দায়েমি এবং গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর ফুয়ুজাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করা হয়।