৬৯তম পবিত্র মি'রাজুন্নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাহফিল ও সালানা ওরছে হযরত গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু উপলক্ষে ঈছালে ছাওয়াব মাহফিল অনুষ্ঠিত।
মানুষ স্রষ্টার শ্রেষ্ঠতম সৃষ্টি আশরাফুল মাখলুকাত। খালেছ অন্তরে মানুষ যখনই যেভাবে ডাকে আল্লাহ পাক সে ডাকে তখনি সাড়া দেন। রিয়া ও নফস হতে মুক্ত হলেই ইবাদত কামিয়াবির পর্যায়ে পৌঁছে। ইবাদতকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার অন্যতম নিয়ামক হলো খুলুছিয়ত তথা বিশুদ্ধ নিয়ত।
প্রিয় রাসুল (দ.)-এর সমস্ত কর্মকাণ্ড এখলাসের উজ্জ্বলতম দৃষ্টান্ত। শায়খ ছৈয়্যদ (রহ.) এখলাসের সুরভিত সৌন্দর্যের অলংকারে সমগ্র জীবনকে নবী প্রেমে রাঙিয়েছেন। পথহারা মানুষকে সঠিক পথের দিশা দিতে দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। আঁধারে আলোকবর্তিকা হয়ে জ্বলে উঠেছেন নূরে মোস্তফার ঐশী আহ্বানে। গাউছিয়্যতের কণ্ঠে ঘোষণা দিয়েছেন, আমাদের তরিক্বত হচ্ছে এছলাহে বাতেনী অর্থাৎ অভ্যন্তরীণ পরিশুদ্ধি, তরিক্বতপন্থিদের নিয়ত খালেছ না হলে এ পথে উন্নতির আশা বৃথা।
গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদস্থের অনুষ্ঠিত ৬৯তম পবিত্র মিরাজুন্নবী (দ.) উদ্যাপন ও কাগতিয়া দরবারের প্রতিষ্ঠাতা স্মরণে অনুষ্ঠিত ঈছালে ছাওয়াব মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। তিনি সালানা ওরছ এবং এ উপলক্ষ্যে প্রকাশিত ক্রোড়পত্রে বাণী প্রদান করায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এম.পি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এম.পি ও ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এম.পি এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শারীরিক শিক্ষা বিভাগ এর চেয়ারম্যান ও সিনেট সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সালানা ওরছে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আলহাজ্ব মোহাম্মদ নূর খাঁন, প্রফেসর ড. জালাল আহমদ, হযরতুলহাজ্ব আল্লামা মোহাম্মদ ইসহাক মুনিরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব সরোয়ার কামাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিকুর রহমান।
এদিন ফজরের নামাজের পর খতম শরীফ, মোরাকাবা, ঈছালে ছাওয়াব, মিলাদ-কিয়াম ও মুনাজাতের পর খতমে কুরআন অদায়ের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ওরছের কর্মসূচি। পূর্ব ঘোষিত তারিখ থেকে মহিলা, প্রবাসী, তরিক্বতপন্থী ও উপস্থিত মুসলিম জনতা সর্বমোট ১৬১২৭টি খতমে কোরআন ২০৫৭টি খতমে তাহলীল এবং ১৫৭টি খতমে ইউনুচ আদায় করেন। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও কাগতিয়া দরবার থেকে পূর্বেই ঘোষিত হয়েছিল-ওরছে কারোর কাছ থেকে গরু-মহিষ-ছাগল, টাকা-পয়সা, নজর-নেওয়াজ ইত্যাদি নেওয়া হবে না, চলবে না শরীয়ত পরিপন্থী কোনো কার্যকলাপ, শুধু কোরআন-সুন্নাহর পূর্ণ অনুসরণে পালিত হবে এ মহা মনীষীর সালানা ওরছ। পরিশেষে, মিলাদ-কিয়াম ও দেশ-জাতির কল্যাণ-উন্নয়ন, অগ্রগতি, সমৃদ্ধি এবং হজরত গাউছুল আজম রাদ্দিয়াল্লাহু আনহুর ফুয়ুুজাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে ফুত পবিত্র এই মাহফিলের সমাপ্ত হয়।