কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফ তরিক্বতের ঐতিহাসিক তরিক্বত কনফারেন্স গতকাল (২৪ মে) শুক্রবার বাদে জুমা হতে চট্টগ্রাম হাটহাজারী ফতেয়াবাদ আদর্শ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হয়।
কনফারেন্সে প্রধান মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের মাননীয় মোর্শেদ আওলাদে রাসূল (দ.) হযরতুলহাজ্ব আল্লামা অধ্যক্ষ শায়খ ছৈয়্যদ মোর্শেদে আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী।
প্রধান মেহমান তাঁর বক্তব্যে বলেন- প্রিয় রাসূল (দ.) এর মুহাব্বত একজন ঈমানদারের মূলধন। রাসূলুল্লাহ (দ.) কে সব কিছুর উর্ধ্বে এমনকি নিজের জীবনের চেয়েও অধিকতর মুহাব্বত করতে না পারলে ঈমানের পরিপূর্ণতার স্তরে পৌঁছানো সম্ভব হয় না। নবীজির মুহাব্বত এর বহিঃপ্রকাশ হলো সর্বাবস্থায় রাসূল (দ.)কে অনুকরণ-অনুসরণ করা। প্রিয় রাসূল (দ.)কে পরিপূর্ণ অনুসরণ-অনুকরণ করে নবীজির অকৃত্রিম মুহাব্বত অর্জনের মধ্য দিয়ে খলিফায়ে রাসুল এর অনন্য মকাম অর্জন করেছেন খলিফায়ে রাসুল (দ.) হযরত গাউছুল আজম (রাঃ)। তিনি একীনে-এবাদতে-এখলাসে নিজের জীবনকে এমনভাবে সাজিয়েছেন যা তার সকল কাজে-কর্মে ফুটে উঠতো প্রিয় নবীজির ভালোবাসা। নিজে যেমন নবীজিকে সকল কিছুর চেয়ে বেশি ভালোবেসেছেন তেমনি অনুসারীদেরও নবী প্রেমের তালিম দিয়েছেন।
এশায়াত কার্যক্রমের মাধ্যমে নবীপ্রেমের এই মশাল ছড়িয়ে দিয়েছেন লাখো মানুষের হৃদয়ে। নবীপ্রেমের সুধা বিতরণের জন্য প্রতিষ্ঠা করেছেন অদ্বিতীয় ছিনা-ব-ছিনা তাওয়াজ্জুহ বিশিষ্ট তরিক্বত। যে তাওয়াজ্জুহ প্রদানের মাধ্যমে মানুষের অন্ধকার কল্ববকে নবীজির নূরে আলোকিত করেছেন। যার মাধ্যমে ইবাদাত বান্দেগীতে আসে একাগ্রতা, সৃষ্টি হয় তাকওয়া-পরহেজগারিতার মাধ্যমে জীবন যাপনের প্রেরণা। সর্বাবস্থায় আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল থাকা। এখলাসের সাথে দ্বীন ইসলামের সকল বিধিবিধান পালনের মাধ্যমে এভাবে একজন মানুষ উচ্চস্তরের মুমিনে পরিণত হয়। আল্লাহ ও তাঁর প্রিয় হাবিব (দ.) এর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে মন্জিলে মকছুদে পৌঁছানোই এ তরিক্বতের মূল লক্ষ্য। এ তরিক্বতে অন্তর্ভূক্ত হলে মানুষের অশান্ত হৃদয় প্রশান্ত হয়, হারাম-হালাল পৃথক করে জীবন ধারণের উপলব্ধি জাগ্রত হয়, আখেরাতের ভাবনায় জীবনকে সাজিয়ে নেয়, জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে খুঁজে পায় মহান আল্লাহর নৈকট্য আর নবীজির অপার ভালোবাসা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য ও সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আবুল মনছুর এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গাউছুল আজম কনফারেন্সে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ভাটিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, চিকনদন্ডী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ নুরুল আবছার সরকার, নানুপুর মাজহারুল উলুম ফাজিল ডিগ্রী মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ হযরতুলহাজ্ব আল্লামা মুসলেহ উদ্দীন আহমেদ মাদানী, প্রফেসর ড. জালাল আহমদ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আলহাজ্ব মুহাম্মদ নুর খান, ফতেয়াবাদ আদর্শ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ সদস্য মোহাম্মদ আলী ফারুক চৌধুরী, মোহাম্মদ লোকমান হাকিম, মোহাম্মদ এমরান, মোহাম্মদ জানে আলম চৌধুরী জিসান। বক্তব্য রাখেন মাওলানা মুহাম্মদ শফিউল আলম, মাওলানা মুহাম্মদ আবদুস সবুর, মাওলানা মুহাম্মদ ফোরকান, মাওলানা মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন, মাওলানা মুহাম্মদ এরশাদুল হক, মাওলানা মুহাম্মদ রকিব উদ্দিন, মাওলানা মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন নুরী, মাওলানা মুহাম্মদ গোলাম রাব্বানী প্রমুখ।
মিলাদ-কিয়াম শেষে মাননীয় প্রধান মেহমান দেশ, জাতি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি-সমৃদ্ধি এবং কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা, খলিলুল্লাহ, আওলাদে মোস্তফা, খলিফায়ে রাসূল (দ.) হযরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর ফুয়ুজাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন।